কদর বাড়ছে শেরপুরের সুগন্ধি চাল 'তুলসীমালা'র! - Tulshimala Point-Sherpur
SUBTOTAL :

Follow Us

price_BDT-115/KG
কদর বাড়ছে শেরপুরের সুগন্ধি চাল 'তুলসীমালা'র!

কদর বাড়ছে শেরপুরের সুগন্ধি চাল 'তুলসীমালা'র!

price_BDT-115/KG
Short Description:
ঐতিহ্যবাহী শেরপুরের তুলসীমালা চাল স্বাদে ও ঘ্রাণে অতুলনীয়।

Product Description

শত বছর আগ থেকেই শেরপুরের তুলসীমালা চালের জুড়ি মেলা ভার। তুলসীমালা শেরপুরের চাষিদের কাছে অমূল্য রত্ন। এই চাল দেখতে যেমন ছোট ও মিহি, এর রয়েছে বাহারি সুগন্ধ। 

আর এই চালের করা রান্না খাওয়ার ৪/৫ ঘণ্টা পর্যন্ত হাতে সুগন্ধ লেগে থাকে।পূর্বে এক শ্রেণির অভিজাত কৃষক এই ধান উৎপাদন করতেন। একদা জমিদার অধ্যূষিত শেরপুর জেলার জমিদাররা এই চালের সুস্বাধু খাবার খেতে অভ্যস্থ ছিলেন। জমিদারদের বাড়িতে ইংরেজরা আসলে তুলসীমালা চালের যত বাহারি খাবার পরিবেশন করা হতো। যাওয়ার সময় ইংরেজদের খুশি করতে কিছু তুলসীমালা চাল গাড়িতেও তুলে দেওয়া হতো। দূরের বিশেষ বা নিকটজন কাউকে তুলসীমালা চাল দেওয়ার এই রেওয়াজ শেরপুরে এখনও চালু আছে। বিশেষ কেউ আসলে এখনও ২-১০ কেজি তুলসীমালা চাল দিয়ে খুশি করা হয়।


প্রতিযোগীতার বাজারে হাইব্রীড ধানের উৎপাদন দিন দিন বাড়লেও কমেনি স্থানীয় জাতের তুলসীমালার চাহিদা। দেশ ও বিদেশে বাড়ছে এই তুলসীমালা চালের কদর। এই ধানের উৎপাদন পরিমান কম হলেও বছর জুড়ে দাম ও চাহিদা থাকে অটুট। আধুনিক হাইব্রিডের যুগে অভিজাত কৃষক ছাড়াও এখন অনেক কৃষকই এই ধান উৎপাদন করেন। তবে এই ধানের জাত কবে কোথা থেকে আনা হয়েছে তা ৮০ বছরের কৃষকও বলতে পারেন  না। সবাই বলেন, 'বাপ দাদা থেকে আমরা পেয়েছি'। 


জানা যায়, বহু পূর্বে জেলার পাহাড়ি এলাকার উঁচু জমি নালিতাবাড়ী ঝিনাইগাতি শ্রীবরর্দী উপজেলায় সীমিত জমিতে এই ধান লাগানো হতো।এখন তুলসীমালা চালের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সমতল অঞ্চল জুড়েও এই ধানের আবাদ হয়ে থাকে। প্রতি বছরই বাড়ছে তুলসীমালার উৎপাদন ও চাহিদা। 

জেলার কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, জেলায় 

  • ২০১৫-১৬ সালে ১০৭৬০ হেক্টর জমি থেকে চাল পাওয়া যায় ১৮২৯২ মে. টন। 
  • ২০১৬-১৭ সালে ১৩৫৯৩ হেক্টর জমি থেকে চাল পাওয়া যায় ২৩১০৮ মে. টন। 
  • ২০১৭-১৮  সালে ১০৮০০ হেক্টর জমি থেকে চাল পাওয়া যায় ১৮৯০০ মে. টন (বন্যার কারণে উৎপাদন কম হয়)।
  • ২০১৮-১৯ সালে ১৩৫৪০ হেক্টর জমি থেকে চাল পাওয়া যায় ২৩৬৯৫ মে. টন (বন্যার কারণে উৎপাদন কম হয়)। 
  • চলতি বছর ২০১৯-২০ সালে জমির পরিমান ও উৎপাদিত চালের পরিমান বেড়ে দাড়ায় যথাক্রমে ১৪৫৪০ হেক্টর ও ২৬৬০৮ মে. টন। 


কৃষক  ও কৃষি অফিস সূত্র জানা গেছে তুলসীমালা আলোক সংবেদনশীল আমন প্রজাতির ধান। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্ট মাসের ১ম সপ্তাহ পর্যন্ত এই ধান লাগানো হয়। অক্টোবর মাসের শেষ থেকে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি ফুল আসে। ডিসেম্বরের ১ম সপ্তাহ থেকে শেষ সপ্তাহ (অগ্রহায়ন মাসের মাঝামাঝি থেকে পৌষ মাসের শুরু) পর্যন্ত ধান কাটতে ।প্রতি হেক্টরে ফলন বলন ছাড়া ২.৫০ থেকে ২.৭৫ মে. টন আর বলনে (প্রতি হেক্টর) উৎপাদন হয় ৩.০০-৩.২৫ মে. টন। বয়সকাল থাকে ১২৫-১৪০ দিন (বলান ও ফলনের ওপর নির্ভর করে)। ধানের রং কালচে ধূসর। ১০০০ ধানের গড় ওজন: গড়ে ১১ গ্রাম (শুকনা ধান)। 


চাল সুগন্ধি, চিকন ও অত্যন্ত সুস্বাদু। পোলাও (ফ্রাইড রাইস), বিরিয়ানী’র জন্য বিশেষ উপযোগী। ধান গাছের উচ্চতা ১১০-১৮৫ সেমি, গড় কুশির সংখ্যা ৮-১০টি। শীষের গড় দৈর্ঘ্য ২২-২৪ সেমি (বলানে শীষের দৈর্ঘ্য বেশি হয়)। শীষে দানার গড় সংখ্যা: ১৪০-১৮০ টি। এটি খরা সহিঞ্চু। সাধারণ নাবী জাত হিসেবে কৃষকরা আবাদ করে থাকে। আকষ্মিক বন্যাপ্রবণ এলাকার জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বলন করলে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ সাধারণত কম হয়। ঢলে পড়ার প্রবণতাও কম দেখা যায়। বলন করে চারা রোপন করলে চারার দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় এক-থেকে দেড় ফুট গভীর পানিতেও রোপর করা যায়। 


“শেরপুরের তুলসীমালা চালের সুনাম ও সমৃদ্ধি শতশত বছর আগের। সম্প্রতি শেরপুর জেলার ব্র্যান্ডিং এখন সুগন্ধি চাল তুলসীমালা। দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা প্রজাতির সুগন্ধি ধানের চাল উৎপাদিত হলেও শেরপুরের সুগন্ধি তুলসীমালা চাল গুন, মান ও সুগন্ধে ভিন্ন রকম।”

Post Source: Bangladesh Protidin

1 Review:

Thanks for submitting your comment.